এই শীতে সর্ষে ক্ষেতে, ঢাকার খুব কাছেই



এই শীতে সর্ষে ক্ষেতে, ঢাকার খুব কাছেই 


এখন জানুয়ারি আসছে সামনে আর ডিসেম্বরের শেষ ভাগ চলছে, সর্ষে ক্ষেত দেখার এখন খুব ভালো একটা সময় চলছে। আপনি যদি শীতের এই সময়ে সর্ষে ক্ষেত না দেখলেন তাহলে বলতে হবে আপনি শীতের খুব চমৎকার একটা দৃশ্য মিছ করেছেন। এখন হয় দেশে সর্ষের চাষ এতটা হয় না, তবুও কোন কোন গ্রামে গেলে মাইলের পর মাইল দেখা যায় সর্ষের ক্ষেত।


ডিসেম্বর থেকে শুরু করে জানুয়ারী এর মাঝামাঝি পর্যন্ত পাবেন এমন হুলদে রাংগা সর্ষের ক্ষেত। ঢাকার আশেপাশে অনেক জায়গাতেই আছে এমন ক্ষেত, আপনি চাইলেই কিছুটা সময় করে দুই পা ঘরের বাইরে দিয়া ঘুরে আসতে পারেন সর্ষে ক্ষেত থেকে।


১। নন্দনকোন


ঢাকার কাছেই আছে নন্দনকোন। মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগরের নন্দনকোন নামেই মুগ্ধতা ছড়ায়। শ্রীনগর খুব বেশি দূরে নয়। বাবুবাজার ও ধলেশ্বরী জোড়া সেতু পার হয়ে নিমতলী আসতে হবে। সেখান থেকে নন্দনকোন আধা ঘণ্টার পথ। এবার নিমতলী থেকে এগিয়ে বাঁ দিকে চৌধুরী সড়কের দক্ষিণমুখী পথে যাবেন। এদিক দিয়ে এগোতে থাকলে সাতগাঁও যাওয়ার আগেই পথে পড়বে চোখ ধাঁধানো সর্ষে ক্ষেত। জায়গাটির নাম নাগের পাড়া।


২। মাওয়া রোড


ঢাকা থেকে মাওয়া রোড ধরে আবদুল্লাহপুর, লৌহজং বা সাইনপুকুর যেদিকেই যান পাবেন দিগন্ত জোড়া সর্ষে ক্ষেত। এখানে পুরো পথ জুড়েই সর্ষে ফুলের মুগ্ধতা। 


৩। বেজেরহাটি


মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের গ্রাম বেজেরহাটি। যেদিকেই দু'চোখ যায় হলুদ আর হলুদ। উপরে নীল আকাশ, নীচে হলুদের মেলা। ঢাকা থেকে খুব দূরেও নয় জায়গাটি।


৪। সিঙ্গাইর


মানিকগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা সিঙ্গাইর। গাঁয়ের ছেলেপুলেদের দুরন্তপনা আর কৃষকদের কর্মব্যস্ত সময়, সবই দেখতে পাবেন এখানের সর্ষে ক্ষেতে। ঢাকার গাবতলী পেরিয়ে কিছুটা সামনেই আমিন বাজার। সেখান থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ছেড়ে হাতের বাঁয়ের রাস্তা সোজা চলে গেছে সিঙ্গাইর। তবে হলুদের রাজ্য পেতে সিঙ্গাইর পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমিন বাজার থেকে সিঙ্গাইরের দিকে প্রায় ৩ কিলোমিটার চললে নদীর উপরে একটি সেতু পার হতে হয়। ওপারে হাতের বাঁয়ে যে কোনো ছোট সড়ক ধরে একটু ভেতরে ঢুকলেই পেয়ে যাবেন হলদু গালিচায় মোড়ানো ফসলের ক্ষেত। 


৫।ঝিটকা


এ জায়গাটিও মানিকগঞ্জে। এখানে গেলেও পেয়ে যাবেন দিগন্তজোড়া সর্ষে ক্ষেত। মাঠ ভরা হলুদ সর্ষে ক্ষেতের ভেতরে বাড়তি দেখা মিলবে আঁকাবাঁকা মেঠোপথের দুই পাশে সারি সারি খেজুর গাছ। এখানকার সর্ষে ক্ষেতগুলোর কোনো কোনো জায়গায় মধুচাষীরা বসেছেন মধু সংগ্রহের জন্য। তাছাড়া সূর্য ওঠার আগে ঝিটকা পৌঁছতে পারলে তাজা খেজুরের রস খেতে পারবেন।

৬। সোনারং


মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন সোনারং। এই শীতে সোনারং-এর রং পাল্টিয়েছে, হয়েছে হলুদ। তাই এখানে গেলেও দেখতে পাবেন মাঠের পর মাঠ সর্ষে ক্ষেত। যেদিকেই তাকাবেন চোখ জুড়িয়ে যাবে। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে চড়ে যাওয়া যায় টঙ্গীবাড়ি।


৭। বসিলা


মোহাম্মদপুরের বসিলা ব্রীজ পার হয়ে গেলে পাবেন অসংখ্য ছোট ছোট গ্রাম। ঢাকার মাঝেই এমন গ্রাম ভাবা যায় না। বসিলা ব্রীজে উঠে ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে চলে যান এসব গ্রামে। পেয়ে যাবেন কাঙ্ক্ষিত হলুদ রাজ্য।


৮। ধামরাই


ঢাকা থেকে সাভার, সাভার থেকে ধামরাই, মেইন রাস্তা থেকে ভেতরে গ্রামের দিকে গেলেই এমন একরের পড় একর সর্ষে ক্ষেতের সন্ধান মিলবে।


সর্ষে ফুল দেখার এখনই সময়। দেরি না করে ছুটির দিনে বেরিয়ে পড়ুন বন্ধুরা মিলে। চোখে সর্ষে দেখা বিপদের লক্ষণ হলেও এই সর্ষে দেখে আপনি পাবেন শুদ্ধ, নির্মল আনন্দ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ