বাংলাদেশ পুলিশ এস আই তে নিয়োগ ২০১৯

তানভীর মেহেদী (সাব ইন্সপেক্টর - তদন্ত)   

পুলিশে এসআই (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি-২০১৯


বাংলাদেশ পুলিশে সাব ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আজ (৫ এপ্রিল ২০১৯) দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত হয়েছে। নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীই সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।


প্রাথমিকভাবে শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের আবেদন ফরম পূরণ করে ৭ মের মধ্যে নিজ নিজ রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।


আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল সকাল ৯টায় শারীরিক মাপ ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এটি অনুষ্ঠিত হবে পুলিশের আটটি বিভাগীয় রেঞ্জে।


এ সময় প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের মূল কপি, সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক সনদের মূল কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি, নাগরিকত্ব সনদের মূল কপি, সত্যায়িত ৩ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবিসহ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে আনতে হবে।


আবেদনের যোগ্যতা :


সাব-ইন্সপেক্টর পদে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে। পাশাপাশি কম্পিউটারে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক এবং অবিবাহিত হতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের বয়স ১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে ১৯ থেকে ২৭ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের ক্ষেত্রে একই তারিখে বয়স ১৯ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে।


শারীরিক যোগ্যতা :


শারীরিক যোগ্যতার পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩২ ইঞ্চি হতে হবে। নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হতে হবে।


পরীক্ষার সূচি :


নির্ধারিত তারিখে শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্রথমে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হবে। ১৬ জুন ২০১৯ তারিখ সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ১৭ জুন ২০১৯ তারিখ সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।


১৮ জুন ২০১৯ তারিখ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ২৫ নম্বরের মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার স্থান প্রার্থীদের পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।


আবেদনপত্র প্রক্রিয়া :


শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডিআইজির কাছ থেকে ওই দিনই তিনশত টাকা নগদ মূল্যে আবেদনপত্র ক্রয় করতে হবে। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের অনুকূলে যেকোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা ১-২২১১-০০০০-২০৩১ অথবা ১২২০২০১১৩৫৯৫৪১৪২২৩২৬ নম্বর কোডে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমাপূর্বক চালানের মূল কপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।


যে সকল কাগজ পত্র লাগবে মাঠে: 


১)  সব সার্টিফিকেটের মূল কপি।

২) কম্পিউটার সার্টিফিকেট

৩) চেয়ার ম্যানের পরিচয় পত্র।

৪) সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্টানের চারিত্রিক পত্র।

৫) এন,আই,ডি কাড,যদি নিজের না থাকে বাবা মায়ের হলেও হবে।

৬) কোটার ক্ষেত্রে তাদের যার সার্টিফিকেট আছে ওটা। 


মাঠের শুরু থেকে শেষ: 


১. পরীক্ষার আগের রাতে মাঠে নেবার সব কাগজ গুছিয়ে ফাইলে করে একটি ব্যাগে রাখবেন এবং পর্যাপ্ত ঘুমাবেন কারন পরীক্ষা শেষ হতে হতে প্রায় বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হবে।


০২। ছেলেরা ফুল প্যান্টের নিচে হাফ প্যান্ট পরবেন এবং শার্ট বা টিশার্টের নিচে গেঞ্জি পরবেন (ফিটনেস পরীক্ষায় দরকার হবে)


০৩। সকাল সকাল নাস্তা খেয়ে বের হবেন এবং মাঠে যথাসময়ের আগেই উপস্থিত হবেন।


০৪। মাঠে যাবার পর সবার প্রথম আপনাদের উচ্চতা মাপা হবে। ৫' ৪" এর বেশি যাদের আছে তারা এইখানে সিলেক্টেড হবে বাকিরা আউট। 


০৫। তারপর সিলেক্টেড ১০ জনদের মত করে দৌড় দেওয়াবে এবং যারা দৌড়ে আগে আসবে তাদের মধ্য থেকে ৬/৭ জনকে সিলেক্ট করা হবে। এটাই হচ্ছে মাঠের মূল। এইখানে টিকলে আপনি রিটেন দেবার ফর্ম এর আশা করতে পারেন (এখানে আপনি সব সময় আপনার হাইট ও শারীরিক দিক থেকে বাহ্যিক ভাবে দুর্বলদের সাথে দৌড় দেবার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার জন্য সুবিধে হবে)


০৬। লং জাম্প এবং দড়ি বেয়ে উঠাটা জাস্ট ফর্মালিটির মতো। এইখান থেকে বাদ যায় না খুব একটা। 


০৭। সিলেক্টেড ক্যান্ডিডেটদের উচ্চতা,ওজন ও কাগজপত্র চেক করার পর আপনাকে মূল ফর্ম দেওয়া হবে যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (কয়েকদিন সময় পাওয়া যায়)আপনাকে পূরন করে সকল কাগজের সত্যায়িত কপি সহ জমা দিতে হবে।


০৮। মাঠ থেকে আগে বের হতে পারলে আপনি বা আপনার কাউকে দিয়ে সোনালী ব্যাংক হতে ৩০০ টাকার চালান কেটে রাখবেন। এতে আপনার সময় বাচবে।


কিছু সাধারন ব্যাপার যেমন : 


০১। চোখে চশমা ইউজ এর জন্য কাউকে বাদ দেওয়া হয় না তবে আপনি মাঠে চশমা ইউজ না করাই ভালো। 


০২। দুই পা ভি আকৃতি করে দাড়ালে হাটু লেগে যাওয়ার সমস্যা থাকলে বাসায় প্রতিদিন কোলবালিস ব্যবহার করুন। পজিটিভ ফলাফল পাবেন। 


০৩। দাঁতের কোন সমস্যা, কোন কাটার দাগে বা ছোটখাটো চর্মরোগে কোন সমস্যা নেই। 


০৪। আপনার হাইট অনুযায়ী ওজন বেশি হলে কিছুদিন রাতে এবং সকালে ভাত খাওয়া বাদ দিন সাথে দৌড়াদৌড়ি করুন। ওজন কম হলে তিনবেলা পেট ভরে খাওয়া দাওয়া করুন এবং মাঠে ওজন মাপার আগে ২ লিটার পানি খাবেন। 


০৫। আপনার স্থায়ী ঠিকানা যেখানে সেই অনুযায়ী আপনাকে মাঠে দাড়াতে হবে। বর্তমান ঠিকানা হিসেবে দাড়ালে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারবেন।


মোটামুটি মাঠের পরীক্ষা এইভাবেই হয়ে থাকে। তবে জেলা ও রেঞ্জ ভিত্তিক কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। মাঠের বিষয়গুলো মাঠের স্যারদের উপর নির্ভর করে তাই যতদূর পারবেন সব কিছু পার্ফেক্টলি করবেন। তারা আপনাকে ফর্ম না দিলে আপনার কিছু করার নাই। তাই সবাই সার্কুলারে উল্লেখিত সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যাবেন।


প্রয়োজনীয় কাগজের বিবরন: 


০১। শিক্ষাগত সকল সার্টিফিকেটের মূল কপি (মূল সার্টিফিকেট না পেলে প্রবিশনাল সার্টিফিকেট নিয়ে গেলে হবে। তাও না পেলে মার্কশীট নিয়ে যাবেন। মাঠের স্যারদের ভালভাবে বুঝিয়ে বলবেন, ঘাউড়ামি বা ত্যাড়ামি করলে ক্ষতি আপনার ই হবে) 


০২। সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে চারিত্রিক সনদের মূল কপি (আপনি যেখান থেকে অনার্স/মাস্টার্স পাশ করেছেন সেই প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে হবে)


০৩। আপনার স্থায়ী ঠিকানার চেয়ারম্যান/মেয়র/কাউন্সিলর এর কাছ থেকে চারিত্রিক সনদের মূল কপি (প্রদানের তারিখ হতে মাঠে দাড়ানোর তারিখ ৩ মাসের বেশি পুরাতন না হওয়াই শ্রেয় )


০৪। জাতীয় পরিচয় পত্রের মূল কপি (না থাকলে নিজের বাবা বা মা এর পরিচয়পত্রের মূল কপি)


০৫। ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি


০৬। মুক্তিযোদ্ধা কোঠাধারীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 


০৭। এমএস অফিস, ইন্টারনেট ও ট্যাবুলশ্যুটিং (কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এর প্রাথমিক ব্যহারিক জ্ঞান) এই শব্দগুলো উল্লেখিত সর্বনিম্ন ৩ সপ্তাহের কম্পিউটার সার্টিফিকেট। (এমএস অফিস,ইন্টারনেট ও ট্যাবুলশ্যুটিং এই শব্দগুলো অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে)


০৮।  সরকারি বা আধাসরকারি কোন জবে থাকলে তার অনুমতিপত্র।


সবগুলো কাগজ পারলে ২ সেট করে ফটোকপি করে সত্যায়িত করে নিয়ে যাবেন। মাঠে এই সব না লাগলেও আপনাকে ফর্ম দেওয়ার পর আপনি মাত্র কয়েকদিন সময় পাবেন এর মধ্যে সব ফটোকপি করে সসত্যায়িত করা ঝামেলার কাজ। তাই আগে থেকে সব গুছিয়ে রাখবেন।


সবার জন্য শুভকামনা

তানভীর মেহেদী
সাব ইন্সপেক্টর (তদন্ত)
৩৮ তম সাব ইন্সপেক্টর ব্যাচ
বাংলাদেশে পুলিশ 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ

  1. স্যার কোন আঙ্গুল কাটা থাকলে সমস্যা হবে?

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

      মুছুন
    2. ৫ টা আংগুল যদি হাতে থাকে তো কোন সমস্যা হবেনা, আর যদি কোন একটা আংগুল অর্ধেক পরে যায় বা কাটা যায়, তাহলে তো সেটা সমস্যা, এটাকে অঙ্গ হানি বলা যায়, এক্ষেত্রে সমস্যা হবে অবশ্যই

      মুছুন

ধন্যবাদ আমাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য