বিরুলিয়ায় একদিন

বিরুলিয়ায় একদিন


তুরাগ নদীর পাড়ে প্রাচীন ও ছোট্ট একটি গ্রাম বিরুলিয়া। জমিদার রজনীকান্তের সুদৃশ্য বাড়ি সহ প্রায় অনেকগুলো প্রাচীন স্থাপনার জন্য বিরুলিয়া বিখ্যাত। এখানে রয়েছে অনেকগুলো জমিদার বাড়ি। চোখে পড়বে বিলুপ্ত প্রায় মাটির ঘর। ঢাকা শহরের কাছেই এমন সুন্দর একটি জায়গায় একবার ঘুরে আসবেন না তা আবার হয় নাকি!!


তুরাগ নদীর পাড়ের এই ছোট্ট গ্রামটি যে কারো মন কেড়ে নিবে আশা করি। গ্রামটির বেশিরভাগ অধিবাসীই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেলেও বিরুলিয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও জমিদার বাড়ি লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছে। গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়বে ছড়ানো ছিটানো কালের সাক্ষী এই বাড়িগুলো। আছে একটি মন্দিরও।


গ্রামের শেষ মাথায় নদীর তীর ঘেঁষে বাড়িটি জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের। সেখানে এখন বাস করছেন রজনীকান্ত ঘোষের বংশধররা।


বাড়িগুলোতে আছে সদরঘর, বিশ্রামঘর, বিচারঘর, পেয়াদাঘর, ঘোড়াশালাসহ উল্ল্যেখযোগ্য আরও কিছু ঘর। তবে এসব এখন অন্য কাজে ব্যবহার হচ্ছে।প্রায় সবগুলোই অন্যদের দখলে। ঘুরে দেখার তেমন সুযোগ নেই।


গ্রামের শেষ মাথায় কালের সাক্ষী শতববর্ষী সেই বিখ্যাত বটগাছ।বটগাছটি গ্রাম থেকে বিচ্ছিম্ন হলেও একেবারে কাছাকাছি।এই বটগাছটিরই ছবি বড় করে ঝোলানো আছে কলকাতায় অবস্থিত ইন্ডিয়া তথা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের প্রধান শোরুমে।


সব দেখে চলে আসুন গোলাপ গ্রাম খ্যাত সাদুল্লাপুর। ছবির মত সুন্দর একটি গ্রাম ।গোলাপ বাগান,গ্লাদিয়াস বাগান, ক্যাকটাস বাগান ছাড়াও রয়েছে নানা সবজির বাগান।


বিরুলিয়ায় কি কি দেখতে পাবেন ?


# বিরুলিয়া জমিদারবাড়ি। 

# ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের সেই বিখ্যাত বটগাছ। 

# গোলাপ গ্রাম। 

# তুরাগ ভ্রমন।




যাতায়াত :


প্রথমে ঢাকার যে কোন প্রান্ত থেকে মিরপুর -১ মাজারে চলে আসুন। এখান থেকে লেগুনায় বিরুলিয়া ব্রিজ, (ভাড়া ২০ টাকা) ।


ব্রিজ থেকে নেমে হাতের বামে আরেকটা ছোট্ট ব্রিজ পারেন। এদিকে ৫ মিনিট হাটলেই জমিদার বাড়ি। সব দেখে চলে আসুন আবার ব্রিজে। এখান থেকে লেগুনায় আকরাইন বাজার। (ভাড়া ৫ টাকা)।


এখানে ভালো হোটেল পাবেন খাওয়াদাওয়া সেরে নিন।দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরুলিয়ার মিরচিনি মুরালির খুব কদর। এখানেই পাবেন। কিছু কিনে নিন বা হাটতে হাটতে খেয়ে নিন। আশা করছি অনেক মজা পাবেন।


এবার রিক্সায় গোলাপ গ্রাম চলে আসুন। রিকশা ওয়ালা আপনার থেকে ভাড়া নিবে ৩০ টাকা।  এর বেশি নিবার কথা না। 


গোলাপ গ্রাম, চারিদিকে গোলাপের বাগান আর গ্রামের সাধারন গোলাপ চাষি দের আড্ডা, গোলাপ গ্রাম ভ্রমন শেষে রিক্সায় আবার চলে আসুন সাদুল্লাপুর ঘাটে, এখানেও আপনার কাছ থেকে ভাড়া নিবে ৩০ টাকা।




ঘাট থেকে ট্রলারে তুরাগ নদী পারি দিয়ে চলে আসুন দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাটে। ট্রলারের ভাড়া পরতে পারে  প্রতি জন ভাড়া ২০ টাকা করে। তুরাগের শান্ত  রুপই দেখবেন, বর্ষায় একটু স্রোত থাকে নদীতে। শীতের সময় একেবারে শান্ত।


এবার দিয়াবাড়ি ঘাটে নেমে আবার রিক্সায় বা বাসে করে চলে আসুন মিরপুর ১ এ, এখানে রিকশা হলে  ভাড়া ৩০ টাকা, আর বাস হলে একটু কম পরবে। 


সুতরাং আমাদের ভ্রমন বিত্তান্ত হলো :


মিরপুর ১ > বিরুলিয়া ব্রিজ > আকরাইন বাজার > গোলাপ গ্রাম > সাদুল্লাপুর ঘাট > দিয়াবাড়ি ঘাট > মিরপুর ১


আমাদের মোট খরচ হতে পারে:


ভাড়া : ২০+৫+৩০+৩০+২০+৩০=১৩৫ টাকা


বি: দ্র: ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি বাগানে গোলাপ বেশি থাকে।

সন্ধ্যার পর ট্রলার চলে না। তাই সন্ধ্যা হওয়ার ৪৫ মিনিট আগেই ঘাটে থাকবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ