এস আই ক্যাডেট দের সারদার রুটিন


পিটিঃ


ভোর ৪ঃ৩০ নাগাদ ঘুম থেকে উঠে প্রাতকার্য সেরে,দাড়ি কামিয়ে,পিটি ড্রেস পড়ে ৫ঃ১০ এ ফলইন সেখান থেকে মাঠে গিয়ে অ্যালাইনমেন্টে দাড়িয়ে থাকা প্রায় ১০/১২মিনিট।


তারপর ৫ঃ৪৫ থেকে ৬ঃ২৫ পিটি।


প্যারেডঃ


পিটি শেষের বাশি পড়ার সাথে সাথে দৌড়ে রুমে এসে পিটি ড্রেস চেঞ্জ করে প্যারেড ড্রেস পড়ে অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে ৬ঃ৫৫ তে ফলইন সেখান থেকে মাঠে গিয়ে আবার ১০/১২ মিনিট অ্যালাইনমেন্টে দাড়িয়ে থাকা।


তারপর ৭ঃ২৫ থেকে ৮ঃ৪৫ পর্যন্ত প্যারেড।


'ল' ক্লাসঃ


প্যারেড শেষ করে রুমে এসে ৩৫-৪০মিনিট সময় পাওয়া যায় তার ভিতর গোসল,নাস্তা সেরে রেডি হয়ে ৯ঃ৫৫ তে ফলইন।


তারপর ১০ঃ০০ থেকে ২ঃ০০ পর্যন্ত 'ল' ক্লাস।


এখানে ১২ঃ০০ থেকে ১২ঃ১৫ একটা ব্রেক আছে তখন একটু হালকা নাস্তা পাবেন কলা/জিলাপি/সিঙ্গারা/পেটিস/আপেল তবে যে কোন একটা।


লাঞ্চ ব্রেক+রেস্টঃ


২ঃ০০ থেকে ব্রেক ৩ঃ৩০ পর্যন্ত বলা যায়,


৩ঃ৪৫ এ আবার প্যারেড ড্রেসে অস্ত্রসহ ফলইন হয়ে ৩ঃ৫৫ এর ভিতর মাঠে।


তারপর ৪ঃ০৫ থেকে ৫ঃ০০ পর্যন্ত প্যারেড।


ট্রেনিংয়ের রুটিনটা ২টা অংশে ভাগ করা হয়


১.মার্চ-অক্টোবর গ্রীষ্মকালীন,


২.সেপ্টেম্বর-ফেব্রুয়ারী শীতকালীন


শীতকালীন রুটিনে ৬মাস বিকেলের প্যারেড ১ ঘন্টা,


আর গ্রীষকালীন রুটিনে বিকেলের প্যারেড ১ঃ৩০ ঘন্টা।


স্টাডি ক্লাসঃ


প্যারেড শেষে রুমে এসে একটু সময় পাবেন তারপর ৬ঃ৩০ এ ক্যাডেট ড্রেসে ফলইন।


৬ঃ৪০ থেকে ৮ঃ১০ পর্যন্ত 'স্টাডি ক্লাস'


রাতঃ


তারপর ওই দিনের মতো ছুটি রাতে খাওয়া-দাওয়া করে শোয়ার আগে অবশ্যই পরের দিনের কথা ভেবে ঘুমাতে হবে।


এটা শীতকালীন রুটিন,এই একই কাজ দিন বড়-ছোট এর উপর ভিত্তি করে সময়ের একটু হেরফের করা হয়।


এগুলো স্বাভাবিক প্রোগ্রাম এর বাইরে আরো বিশেষ প্রোগ্রাম থাকেঃ


১.সুইমিং,


২.হর্স রাইডিং,


৩.বাইক রাইডিং,


৪.অবস্ট্যাকল(এই প্রোগ্রামের ভিতরই আছে সারদার সেই ঐতিহাসিক দেয়াল)


৫.ফায়ারিং(কয়েক দফা প্রাকটিস ও শেষমেষ পরীক্ষা)


৬.ডিফেন্সিফ ট্যাকটিস।


ছুটির দিনঃ


সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ৮ঃ০০ তে ফলইন তবে কোন কাজ নেই রোল কল নিয়েই সাধারনত ছেড়ে দেয়,


দুপুরে নামাজের ফলইন ১২ঃ২০ এ,


ছুটির দিন বিকেলে গেম প্যারেড থাকে,


আর হিন্দুদের জন্য সন্ধ্যায় প্রতি শুক্রবার মন্দির।


শুক্রবার ছাড়া ওই একই নিয়মে বাকি সরকারী ছুটিগুলোও পাবেন(তবে শুক্রবার ছাড়া অন্যান্য ছুটির দিন সাধারনত নমাজ ও মন্দিরে যাওয়া লাগে না)


সব কাজের ফাকে গ্রীষ্মকালে প্রচুর গরম,


আর শীতকালে একটু বেশি শীতের সাথে অবশ্যই আপনাকে মানিয়ে নিতে হবে।


এখানে ১মিনিট সময়ের খুব দাম


নিজের জন্য একটু বাচার সময় আসলে পাওয়া খুব কষ্টকর


ভেবে দেখুন এটার সাথে আপনি মানিয়ে নিতে পারবেন কি না???


যদি দারোগাগিরি করতে চান একবছর আপনাকে এই সব কাজগুলো করতে হবে,


পারবেন কি পারবেন না এখন থেকেই মনস্থির করুন।।


একটা বছরের জন্য একাডেমির নামে জীবন উৎসর্গ করে দেয়ার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হোন


চাকরি হলে এটা আপনার ট্রেনিংয়ের একবছর আর মাঠে কি আছে সেটা এখনো জানি না তাই সেটা একটু বিস্তারিত বলার জন্য গুরু Kazi Sajib Ahmed কে বলার অনুরোধ রইলো।


নিরুৎসাহিত করছি না তবে এসব মেনে নিতে পারলে বাংলাদেশ পুলিশে আপনাকে স্বাগতম।।


তানভীর মেহেদী
সাব ইন্সপেক্টর (তদন্ত)  
৩৮ তম ক্যাডেট এসআই।

------


স্বাঅন্য আরেকজন এস আই ক্যাডেট এর সারদা রুটিন দেখে নিনঃ 

১) ভোর ৪ টা থেকে ৪.১৫ টার ভিতরে ঘুম থেকে ওঠা, আগে ওঠাই ভালো কারণ বাথরুমে সিরিয়াল লম্বা। এ সময় ব্রাশ, সেভ, টয়লেট,প্রয়োজনে গোছল করে নেওয়া। সেভ প্রতিদিন সকালে করতে হবে।ভোর ৪.৪৫ টার সময় ফলইন( সবাই একত্রে লাইনে দাড়ানো)। ফল ইন এর সময় ঋতু অনুযায়ী টাইম সামনে পিছনে আসবে। পিটি ড্রেস(সাদা হাফপেন্ট, সাদা হাফ সাট)পরে ফলইনে যাওয়া লাগে। ৫.০ টায় মাঠে নিবে। ৬ টা পর্যন্ত মাঠে পিটি চলে।৬.১০ এ রুমে আসি।

২) মাঠ থেকে আসার পরে হালকা নাস্তা করে প্যারেড ড্রেস পড়ে( পুলিশ ড্রেস) ৬.৩০ এ দ্বিতীয় ফলইন। ৭ টায় মাঠে নিবে। ১.৩০ ঘন্টা প্যারেড চলে। ৮.৩০ এ শেষ। রুমে আসতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগবে। এর পরে গোসল, সকালের খাবার।


৩) ১০ টায় তৃতীয় ফলইন। ক্লাস ড্রেস(পুলিশ ড্রেস)। ২ টার সময় ছাড়বে।১০-২ পযন্ত আইনইন ক্লাস চলে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আসতে আসতে সর্বোচ্চ ২.৩৫ লাগবে।তারপর নামায পড়া লাগে।


৪) ৪.১৫টার সময় চতুর্থ ফলইন। প্যারেড ড্রেস। ৪.৩০ টায় মাঠে নিবে।৪.৪৫-৬.১৫ পযন্ত এ ১.৩০ ঘন্টা মাঠ প্যারেড। মাঠ থেকে আসতে আসতে ৬.৩০বাজবে। 


৫) ৭.১৫ তে পঞ্চম ফলইন। নাইট ক্লাস ড্রেস(কালো।প্যান্ট, সাদা সাট, টাই)। রাত ৯ টায় ছাড়বে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে আসতে সর্বোচ্চ ৯.৩০ টা বাজবে।

বি. দ্র. ঋতু, আবহাওয়া, ওস্তাদজী, কর্তৃপক্ষের মেজাজের উপর টাইম শিডিউল চেন্জ হবে। শিডিউল দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটা প্রত্যেককে এমন ভাবে তৈরি করবে যেন একজন চাইলে ২ মিনিটেই রেডি হতে পারে। প্রথমে একটু কষ্ট হলেও পরে মনে হবে ফ্রি সময় অনেক।


সারদার ট্রেনিং কোন কষ্টদায়ক কিছু না। শুধু টাইম মেইনটেইনটাই মুখ্য। সারদা থেকে ট্রেনিং না পারার কারণে আজ পর্যন্ত কেউ ফেল করেনি, বা কাউকে বের করা হয়নি। আমরা যেহেতু পেরেছি, তাই আপনারাও পারবেন ইনস-আল্লাহ

সজিব আহমেদ

৩৬ তম সাব-ইনস্পেক্টর ব্যাচ

সদর মডেল থানা, নারায়নগঞ্জ


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

ধন্যবাদ আমাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য